SSC Case Update: এসএসসি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে প্রথম কিউরেটিভ পিটিশন দাখিল, পাশাপাশি চলছে মেগা শুনানি

WB TEAM

SSC Case Update

SSC Case Update: পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) নিয়োগ দুর্নীতি মামলা এখন আরও জটিল পর্যায়ে পৌঁছেছে। একদিকে সুপ্রিম কোর্টে দাখিল হয়েছে মামলার প্রথম কিউরেটিভ পিটিশন, অন্যদিকে ২৬,০০০ চাকরি বাতিলের রায় সংক্রান্ত “মেগা শুনানি” নিয়েও আদালতে চলছে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। এই দুটি পদক্ষেপই মামলার ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সুপ্রিম কোর্টে প্রথম কিউরেটিভ পিটিশন দাখিল

১৮ই অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে এসএসসি শিক্ষক বাতিল মামলার প্রথম কিউরেটিভ পিটিশনটি দাখিল করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইনি পদক্ষেপ, কারণ এর আগে দাখিল করা প্রায় ১০০টিরও বেশি রিভিউ পিটিশন শীর্ষ আদালত খারিজ করে দিয়েছিল।

সেই রিভিউ পিটিশনগুলির বেশিরভাগই চেম্বারে ডিসমিস হয়ে যায়, কারণ আবেদনকারীরা নতুন কোনো তথ্য বা শক্তিশালী আইনি যুক্তি উপস্থাপন করতে পারেননি যা পূর্বের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য যথেষ্ট ছিল।

পিটিশনের ভিত্তি ও উদ্দেশ্য

এই কিউরেটিভ পিটিশনটি মূলত হুমায়ুন ফিরোজ মন্ডল বনাম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য (ডায়েরি নং ২৮১৬০/২০২৫) মামলার রিভিউ পিটিশনের উপর ভিত্তি করে দায়ের করা হয়েছে। চাকরিহারাদের একাংশ এই পিটিশনের মাধ্যমে শেষ আইনি চেষ্টা চালাচ্ছেন, যাতে আদালত পূর্বের চাকরি বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা করে।

তবে এখন পর্যন্ত এই কিউরেটিভ পিটিশনের শুনানির কোনো নির্দিষ্ট তারিখ জানা যায়নি। এটি দীর্ঘমেয়াদী আইনি প্রক্রিয়া, যা শুরুর আগে সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন প্রয়োজন।

সুপ্রিম কোর্টে চলছে মেগা শুনানি

একই সময়ে, সুপ্রিম কোর্টে এসএসসি মামলার সঙ্গে যুক্ত আরও ৩৭টি মামলা একত্রিত করে ২৯ অক্টোবর একটি “মেগা শুনানি” অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই শুনানিকেই মামলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্ব হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গত কয়েক দিনের শুনানিতে আদালত মামলার পক্ষগুলির প্রতি কড়া মন্তব্য করেছে। আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে—“এখন সবাই সাধু সাজছে।” এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট, আদালত এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলার ব্যাপারে কোনো রকম শৈথিল্য দেখাতে নারাজ। পাশাপাশি আদালত সংশ্লিষ্ট পক্ষদের হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, যা মামলার গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

দুই দিকের আইনি লড়াই

বর্তমানে এসএসসি মামলা দুটি ভিন্ন আইনি পথে এগোচ্ছে—একদিকে রয়েছে কিউরেটিভ পিটিশন, অন্যদিকে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নিয়মিত শুনানি। কিউরেটিভ পিটিশনের সাফল্যের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ, কারণ এটি আদালতের সর্বশেষ ও চূড়ান্ত আইনি আশ্রয়।

অন্যদিকে, চলমান শুনানিগুলিতে আদালতের কঠোর মনোভাব এবং ধারাবাহিক নির্দেশ রাজ্য সরকার ও এসএসসি কর্তৃপক্ষের ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করছে।

পরবর্তী পদক্ষেপ ও সম্ভাবনা

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মামলার ভবিষ্যৎ এখন সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। চাকরিপ্রার্থী, শিক্ষক এবং রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর—সকলের নজর এখন আদালতের পরবর্তী পদক্ষেপে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মামলা সহজে শেষ হবে না। বরং আগামী সপ্তাহগুলিতে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও নাটকীয় মোড় দেখা যেতে পারে। আদালতের প্রতিটি রায় এখন রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় গভীর প্রভাব ফেলবে।

উপসংহার

এসএসসি মামলার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি প্রমাণ করছে যে, আদালত এখন কোনো পর্যায়েই গাফিলতি মেনে নিতে রাজি নয়। কিউরেটিভ পিটিশন হোক বা মেগা শুনানি—উভয়ই এই মামলার আইনি লড়াইকে আরও তীব্র করে তুলেছে। সমস্ত পক্ষের জন্যই এটি এখন চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময়।

Leave a Comment