SSC Case Update: সুপ্রিম কোর্টে SSC-র মেগা শুনানি, ২৯শে অক্টোবর একসঙ্গে ৩৭টি মামলার ভাগ্য নির্ধারণ

WB TEAM

SSC Case Update

SSC Case Update: স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) চাকরিপ্রার্থীদের জন্য সামনে আসছে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। আগামী ২৯শে অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে অনুষ্ঠিত হবে এক ‘মেগা শুনানি’। এই দিনে শীর্ষ আদালতের কোর্ট নম্বর ৯-এ বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি অলোক আরাধির বেঞ্চে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন সংক্রান্ত মোট ৩৭টি মামলা একসাথে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে। এই মামলাগুলির রায়ের ওপর নির্ভর করছে রাজ্যের অসংখ্য চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ, বিশেষ করে আপার প্রাইমারি স্তরের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে।

মূল মামলা: বিবেক পারিয়া কেস

এই ৩৭টি মামলার মধ্যে প্রধান মামলা হলো ‘বিবেক পারিয়া অ্যান্ড ওরস বনাম পশ্চিমবঙ্গ সরকার’ (Bivek Parihar & Ors. vs. State of West Bengal)। এই মামলার সঙ্গেই আরও ৩৬টি মামলা ট্যাগ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ৩৩টি বিবিধ অ্যাপ্লিকেশন (MA) এবং ৩টি স্পেশাল লিভ পিটিশন (SLP)।

বিবেক পারিয়া মামলাটি মূলত সেই সমস্ত ‘আনটেনটেড’ (Untented) প্রার্থীদের নিয়ে, যাদের আদালত ৩১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত চাকরিতে বহাল থাকার অনুমতি দিয়েছিল এবং তাদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়েছিল।

মূল বিতর্ক: যোগ্যতার মাপকাঠি 45% বনাম 50%

এই মামলাগুলির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আপার প্রাইমারি (শারীরিক শিক্ষা বাদে) শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতার মানদণ্ড। ২০১৬ সালের নিয়ম অনুযায়ী, প্রার্থীরা যদি গ্র্যাজুয়েশন বা পোস্ট-গ্র্যাজুয়েশনে অন্তত ৪৫% নম্বর পেতেন, তাহলে তারা আবেদন করতে পারতেন।

তবে পরবর্তীকালে, স্কুল সার্ভিস কমিশন যোগ্যতার মাপকাঠি পরিবর্তন করে ন্যূনতম ৫০% নম্বর বাধ্যতামূলক করে দেয়। এই পরিবর্তনকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় বিতর্ক। বিবেক পারিয়া মামলায় আদালত একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে জানিয়েছিল যে, ২০১৬ সালের নিয়মে আবেদন করা ৪৫% নম্বরপ্রাপ্ত প্রার্থীরাও নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন, এবং তাদের ওপর নতুন ৫০% নম্বরের শর্ত প্রযোজ্য হবে না।

এই অন্তর্বর্তী আদেশের বিভিন্ন দিক নিয়ে পরবর্তীকালে একাধিক মামলা দায়ের হয়, যেগুলি এখন একত্রে শুনানির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।

কেন একসঙ্গে এত মামলা?

তালিকাভুক্ত ৩৩টি বিবিধ অ্যাপ্লিকেশনের (MA) অধিকাংশই দায়ের হয়েছে পূর্ববর্তী আদালতের আদেশের “মডিফিকেশন” (সংশোধন) বা “ক্লারিফিকেশন” (স্পষ্টীকরণ) চেয়ে।

কিছু আবেদনকারী জানতে চেয়েছেন, আদালতের পূর্ববর্তী আদেশগুলি ঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছে কি না, বা সেই আদেশের প্রকৃত অর্থ কী। এর পাশাপাশি, অভিজিৎ সাধুখাঁ, উত্তম মজুমদার এবং রেহানা বেগমের মতো আবেদনকারীদের দায়ের করা কিছু নতুন SLP-ও এই গুচ্ছ মামলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, যেগুলির শুনানি এখনো বাকি ছিল।

চাকরিপ্রার্থীদের নজর ২৯শে অক্টোবরের দিকে

সব মিলিয়ে, ২৯শে অক্টোবরের এই ‘মেগা শুনানি’ আপার প্রাইমারি নিয়োগ প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আদালত কি পূর্বের আদেশ বহাল রাখবে? নাকি যোগ্যতার মাপকাঠিতে নতুন পরিবর্তন আসবে? এই প্রশ্নগুলির উত্তরই ঠিক করবে হাজার হাজার প্রার্থীর ভাগ্য।

সুপ্রিম কোর্টের কোর্ট নম্বর ৯-এ অনুষ্ঠিত এই শুনানির ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরবর্তী পদক্ষেপ। তাই রাজ্যের সমস্ত চাকরিপ্রার্থী এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ২৯শে অক্টোবরের এই গুরুত্বপূর্ণ দিনের জন্য।

শেষ কথা

SSC মামলাগুলির এই একত্র শুনানি রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ ব্যবস্থার দিকনির্দেশ বদলে দিতে পারে। আদালতের এই রায় কেবল প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ নয়, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা ও স্বচ্ছতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে।

Leave a Comment