এসএসসি (স্কুল সার্ভিস কমিশন) মামলাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ১২ নম্বর কোর্টে বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে মামলাটির গুরুত্বপূর্ণ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এই শুনানিতে মূলত ‘টেন্টেড’ বা বিতর্কিত প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং আদালতের পর্যবেক্ষণ মামলায় নতুন মোড় এনেছে।
শুনানির মূল বিষয়
এদিনের শুনানির প্রধান কেন্দ্রবিন্দু ছিল সেই প্রার্থীরা যাদের ‘টেন্টেড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং যাদের নিয়োগপত্র বাতিল করা হয়েছে। কিছু প্রার্থী নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন এবং তথ্যের অধিকার আইন (RTI) থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাদের মূল দাবি ছিল, তাদের ‘টেন্টেড’ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হোক এবং চাকরির সুযোগ পুনরায় ফিরে দেওয়া হোক।
আদালতের পর্যবেক্ষণ
আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে যে, যারা ‘টেন্টেড’ হিসেবে চিহ্নিত, তাদের চাকরিতে বহাল রাখা সম্ভব নয়। বিচারপতি উল্লেখ করেন যে, শুধুমাত্র ‘আনটেন্টেড’ বা নির্দোষ প্রার্থীরাই ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরিতে থাকতে পারবেন এবং নতুন পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন।
আবেদনকারীর পক্ষের বক্তব্য
আবেদনকারীদের আইনজীবী বারবার দাবি করেন যে, তাদের মক্কেলরা ‘টেন্টেড’ নন এবং অন্তত দুই মিনিট সময় দেওয়া হোক তাদের বক্তব্য পেশ করার জন্য। তবে বিচারপতি এটি জরুরি বা গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলে মনে করেননি এবং আবেদন শোনার অযোগ্য বলে মন্তব্য করেন।
সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত
আদালত জানিয়েছে যে, তারা হাইকোর্টের রায়কেই মান্যতা দিয়েছে। নতুন করে ‘আমি টেন্টেড নই’ এই দাবির কোনো ভিত্তি নেই। বিচারপতি মন্তব্য করেন, “সবকিছু শেষ হয়েছে। এখন সবাই যদি বলে আমি টেন্টেড নই, তাহলে কী হবে?”
দুর্নীতি ও রাজনৈতিক প্রভাব
শুনানির সময় বিচারপতি বাগ কমিটির রিপোর্ট উল্লেখ করেন, যেখানে রাজনৈতিক নেতা ও মন্ত্রীর সুপারিশে চাকরি দেওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। সিবিআই তদন্তেও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। যদিও আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী দাবি করেন যে, তাদের মক্কেলরা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নয় এবং তারা RTI রিপোর্টের ভিত্তিতেই আদালতে এসেছেন।
ভবিষ্যতের পথে SSC নিয়োগ
আদালত জানিয়েছে যে, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে এবং ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছি। এই পরিস্থিতিতে কোনো ‘টেন্টেড’ প্রার্থীকে নতুন সুযোগ দেওয়া হবে না। এছাড়াও বিজয় বিশ্বাস সহ আরও কিছু মামলা বিচারাধীন রয়েছে, এবং সেগুলোর ওপর নজর রাখা হচ্ছে। কোনো ‘টেন্টেড’ প্রার্থী নতুন পরীক্ষায় অংশ নিলে সেটিও পর্যবেক্ষণ করা হবে।
শেষ মন্তব্য
শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট এই মামলাটি শোনার অযোগ্য বলে খারিজ করেছে এবং নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়াই এখন মূল লক্ষ্য।