SSC 10 Marks Case: এসএসসি-র ১০ নম্বর সংক্রান্ত মামলা নিয়ে আবারও নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে। সম্প্রতি আদালতে ওঠা দুটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। মূল প্রশ্ন—এই ১০ নম্বর ইন্টারভিউয়ের আগে দেওয়া হবে নাকি পরে? এই বিষয়টি নিয়ে মামলা ফের দেশের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সর্বশেষ শুনানির অর্ডার কপিতে এমন কিছু পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে যা যোগ্য শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। আদালতের বক্তব্য অনুযায়ী, ইন্টারভিউয়ের আগে এই ১০ নম্বর কেড়ে নেওয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যেহেতু সম্পূর্ণ ফলাফল এই রিট কপির ওপর নির্ভরশীল, তাই এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। উল্লেখযোগ্যভাবে, সমস্ত প্রার্থী সরকারি গ্যাজেটের নিয়ম মেনে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন, তাই সেই গ্যাজেটে পরিবর্তন আনলে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রশ্নের মুখে পড়বে।
গ্যাজেট পরিবর্তন ও আইনি জটিলতা
যদি নিয়োগ সংক্রান্ত গ্যাজেটে পরিবর্তন আনা হয়, তাহলে সম্পূর্ণ SSC পরীক্ষা প্রক্রিয়াটি নতুন করে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। যোগ্য শিক্ষকরা এই পরিবর্তন মেনে নেবেন না, কারণ এটি রাজ্যপাল এবং বিধানসভা অনুমোদিত একটি সরকারি গ্যাজেট।
এর আগেও ২০১৬ সালের ইন-সার্ভিস টিচারদের ১০ নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল, যেখানে আবেদনকারীরা এই নম্বর দেওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন। ফলে এইবারের মামলাটিও অনেকটা সেই প্রেক্ষাপটে এগোতে পারে।
পূর্ববর্তী মামলার প্রেক্ষাপট
এই বিতর্কের গভীরে যেতে হলে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পুরনো মামলার দিকে নজর দেওয়া জরুরি।
- গোপা বিশ্বাস ও অরুনিমা পাল মামলা: গোপা বিশ্বাসের মামলায় (কেয়ার অফ ফেরদৌস শামিম) অরুনিমা পাল মামলার প্রসঙ্গ ওঠে। রিট কপির ১২ নম্বর পৃষ্ঠায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে ২০১৬ সালের আপার প্রাইমারি নিয়োগের গ্যাজেটে টিচিং এক্সপেরিয়েন্সের জন্য কোনো নম্বর নির্ধারিত ছিল না। তবে ২০২২ সালের নিয়ম অনুযায়ী এই টিচিং এক্সপেরিয়েন্সের মার্কস আগেই অরুনিমা পাল মামলায় চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল।
- সঞ্জয় কুমার দলই মামলা: পূর্ণিমা পালের মামলার মতোই, সঞ্জয় কুমার দলই মামলাতেও ১০ নম্বর প্রদানের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল।
এই মামলাগুলির বিশ্লেষণ থেকে বোঝা যায় যে ১০ নম্বর প্রদানের বিষয়টি আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে বড় সমস্যা নয়। তবে মূল বিতর্ক এখন ঘুরছে এই নম্বর ইন্টারভিউয়ের আগে দেওয়া হবে, নাকি পরে—তা নিয়ে।
বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
সাম্প্রতিক অমৃতা সেন মামলার অর্ডার কপির একটি প্যারাগ্রাফ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। গ্যাজেট অনুযায়ী, এই ১০ নম্বর ইন্টারভিউয়ের আগেই দেওয়া উচিত বলে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
যদি এই মামলা ডিভিশন বেঞ্চ বা সুপ্রিম কোর্ট-এ ওঠে, তবে সম্ভবত একটি স্থায়ী মীমাংসা হবে, এবং সেটি যোগ্য শিক্ষকদের পক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি এই মামলা জাস্টিস সঞ্জয় কুমার-এর বেঞ্চে যায়, তাহলে ‘আগে না পরে’ বিতর্কের অবসান হবে। কারণ তিনি পূর্বে প্রশ্ন তুলেছিলেন—পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশের পর এই ইস্যু কেন উত্থাপিত হচ্ছে? এই যুক্তির ভিত্তিতেই ধারণা করা হচ্ছে, রায় শিক্ষকদের পক্ষেই যাবে।
পরবর্তী শুনানি ১২ তারিখ নির্ধারিত রয়েছে, এবং রাজ্যের সমস্ত চাকরিপ্রার্থী এখন সেই তারিখের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন।
উপসংহার
SSC-র ১০ নম্বর মামলা এখন আবার দেশের শীর্ষ আদালতের দোরগোড়ায়। এই মামলার রায় শুধু কয়েক হাজার যোগ্য শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে না, বরং রাজ্যের শিক্ষা নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই আগামী শুনানির দিকে এখন সবার চোখ।









