Primary TET Certificate: পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার প্রাথমিক শিক্ষকরা, যারা ২০১২ সালের প্রাথমিক টেট (TET) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন, তারা বর্তমানে তাদের টেট পাস সার্টিফিকেট প্রদানের দাবি জানিয়ে শিক্ষা দপ্তরের কাছে আবেদন করেছেন। টেট বাধ্যতামূলক মামলার প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপটি তাদের কর্মজীবনের সুরক্ষার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দাবি হিসেবে উঠে এসেছে।
মূল দাবি ও প্রেক্ষাপট
শিক্ষকদের প্রধান দাবি হলো, অবিলম্বে তাদের ২০১২ সালের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের পাস সার্টিফিকেট প্রদান করা হোক। এই দাবির পেছনে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি রয়েছে —
১. আরটিই আইন, ২০০৯
শিক্ষার অধিকার আইন (RTE Act, 2009) অনুযায়ী, প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে টেট পাস করা বাধ্যতামূলক। শিক্ষকদের দাবি, তারা ২০১২ সালের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই বৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন।
২. এনসিটিই নির্দেশিকা
ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (NCTE) কর্তৃক ২৩শে আগস্ট, ২০১০ তারিখে প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী, টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রতিটি প্রার্থীকে পাস সার্টিফিকেট প্রদান করা বাধ্যতামূলক। এই নির্দেশিকার ভিত্তিতেই শিক্ষকরা তাদের সার্টিফিকেটের দাবিতে আবেদন করেছেন।
শিক্ষকদের বক্তব্য অনুযায়ী, এটি তাদের ন্যায্য অধিকার, যা দ্রুত প্রদান করা প্রয়োজন।
উদ্বেগের কারণ
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের পর থেকে শিক্ষকদের মধ্যে ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। টেট পাস সার্টিফিকেট না থাকলে, তাদের পুনরায় পরীক্ষায় বসতে হতে পারে, যা বহু বছর কর্মরত শিক্ষকদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
এই সার্টিফিকেট কেবলমাত্র একটি নথি নয়, এটি তাদের যোগ্যতার প্রমাণ ও চাকরির স্থায়িত্বের নিশ্চয়তা।
১০০ নম্বরের টেটের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন
২০১২ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষাটি হয়েছিল ১০০ নম্বরের, যেখানে এনসিটিই-র নিয়ম অনুসারে টেট পরীক্ষা হওয়া উচিত ১৫০ নম্বরের। এই কারণে পরীক্ষার বৈধতা নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে।
তবে শিক্ষকরা যুক্তি দিয়েছেন যে, ২০১২ সালের আপার প্রাইমারি টেট (SSC কর্তৃক পরিচালিত) পরীক্ষা ৯০ নম্বরের হলেও সেটি স্বীকৃতি পেয়েছে এবং তার মেয়াদ আজীবন বহাল রয়েছে। তাই প্রাথমিক টেটের ক্ষেত্রেও একই রকম স্বীকৃতি দাবি করেছেন তারা।
ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
প্রথমে শিক্ষকরা শিক্ষা দপ্তর ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে তাদের দাবিপত্র জমা দিয়েছেন। যদি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া না মেলে, তবে তারা আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন বলে জানিয়েছেন।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, আদালতে গেলে শিক্ষকদের পক্ষে রায় আসার সম্ভাবনাই বেশি।
শেষ কথা
বর্তমানে রাজ্যের শিক্ষক মহলে এই দাবি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। শিক্ষা দপ্তর এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়। যদি শিক্ষকদের এই ন্যায্য দাবি পূরণ হয়, তাহলে রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হবে।
শিক্ষা সংক্রান্ত সর্বশেষ আপডেট পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যুক্ত থাকুন।