Gold Price Drop: বর্তমানে সোনার দাম আকাশছোঁয়া পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা সাধারণ মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে বিনিয়োগকারীদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। তবে বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, খুব শীঘ্রই সোনার দামে বড়সড় পতন দেখা যেতে পারে। পেস ৩৬০ সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং চিফ গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিস্ট অমিত গোয়েল জানিয়েছেন, সোনার দাম এখন এমন এক পর্যায়ে রয়েছে, যেখান থেকে পতন অনিবার্য হতে পারে।
কেন এই পতনের আশঙ্কা?
অমিত গোয়েলের মতে, ইতিহাসে সোনার দামে এই ধরনের অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি খুবই বিরল। গত ৪০ বছরে মাত্র দুবার সোনা ও রুপোর দাম এমনভাবে বেড়েছিল, এবং সেই দুই ক্ষেত্রেই ডলারের সূচক দুর্বল ছিল। ফলস্বরূপ, দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল ঠিকই, কিন্তু পরে দ্রুত নেমেও গিয়েছিল।
তিনি সতর্ক করে বলেন, বর্তমানে সোনা এমন এক ‘বুল রান’-এর শেষ পর্যায়ে রয়েছে, যেখানে দাম একটি সীমা ছুঁলেই বিনিয়োগকারীরা সোনা বিক্রি করতে শুরু করবেন। এর ফলে বাজারে ব্যাপক সেলিং চাপ তৈরি হবে, এবং সোনার দাম দ্রুত কমে যাবে।
কতটা কমতে পারে সোনার দাম?
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সোনার দামে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত পতন হতে পারে। যদি এই পূর্বাভাস সত্যি হয়, তাহলে ১০ গ্রাম সোনার দাম ৭৭ হাজার টাকায় নেমে আসতে পারে।
রুপোর ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, রুপোর দামে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত পতন ঘটতে পারে। ফলে এক কিলোগ্রাম রুপোর দামও ৭৭ হাজার টাকার কাছাকাছি নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
রুপোর দামে এত বড় পতনের কারণ
রুপোর চাহিদা মূলত শিল্পক্ষেত্রভিত্তিক—যেমন ফটোভোল্টাইক সেল, সেমিকন্ডাক্টর এবং বৈদ্যুতিক যানবাহন উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। অর্থনৈতিক মন্দার সময় এই সব শিল্পের চাহিদা হ্রাস পেলে রুপোর দামেও সরাসরি প্রভাব পড়ে।
বর্তমানে রুপোর বাজারে একটি “বাবল” তৈরি হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যার কারণে সোনার তুলনায় রুপোর দামের পতনের সম্ভাবনা আরও বেশি।
বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ পরামর্শ
অমিত গোয়েল বিনিয়োগকারীদের জন্য “ধীরে চলো” নীতি অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। বর্তমান অস্থির বাজারে হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। তিনি বলেছেন, যারা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের কথা ভাবছেন, তাদের কিছুটা অপেক্ষা করা উচিত।
১. অপেক্ষা করুন
সোনার দাম প্রতি আউন্সে ২৬০০ থেকে ২৭০০ ডলার বা ১০ গ্রাম সোনার দাম ৮১,০০০ থেকে ৮৪,০০০ টাকার মধ্যে নামা পর্যন্ত অপেক্ষা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
২. সতর্ক থাকুন
রুপোর ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্কতা প্রয়োজন। বাজারে বড় পতনের সম্ভাবনা থাকায় অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি নেওয়া ঠিক নয়।
৩. পোর্টফোলিও শক্তিশালী করুন
সোনা ও রুপোর বাইরে অন্যান্য বিনিয়োগের দিকেও নজর দেওয়া দরকার। একটি বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগ পোর্টফোলিও ভবিষ্যতের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয়
স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের জন্য এখন বাজার বেশ অস্থির। তাই যারা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য কিছুটা অপেক্ষা করাই সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে। বাজারে স্থিতি ফেরার পরই বড় বিনিয়োগ করা শ্রেয়।
গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা
দ্রষ্টব্য: বিনিয়োগের আগে অবশ্যই আপনার আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ করুন। এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য প্রকাশিত হয়েছে। আমরা কোনো ধরনের বিনিয়োগ পরামর্শ প্রদান করি না।