পশ্চিমবঙ্গ সরকার জমি ও বাড়ি রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের জন্য একটি নতুন হেল্পলাইন পরিষেবা চালু করতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হল নাগরিকদের স্বচ্ছ, সহজ এবং দালাল-মুক্ত পরিষেবা প্রদান করা। প্রায়শই সাধারণ মানুষ জমি বা বাড়ি রেজিস্ট্রেশন করার সময় নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। দালালের খপ্পরে পড়ে হয়রানি হওয়া বা ভুল তথ্যের কারণে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ার ঘটনা প্রচলিত। এই সব সমস্যার সমাধান করতে রাজ্য সরকার এই নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
নতুন হেল্পলাইনের উদ্দেশ্য
রাজ্য সরকারের অর্থ দফতরের অধীনে থাকা ‘ডিরেক্টরেট অফ রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড স্ট্যাম্প রেভিনিউ’ এই হেল্পলাইন চালু করার মূল উদ্দেশ্যগুলো হলো:
- দুর্নীতিমুক্ত পরিষেবা: দালাল বা মধ্যস্থতাকারীর সাহায্য ছাড়া সাধারণ মানুষ সরাসরি সরকারি পরিষেবা পেতে পারেন।
- স্বচ্ছতা: জমি বা বাড়ি রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা প্রদান।
- সহজ সমাধান: মাত্র একটি ফোন কলেই নাগরিকরা তাদের সমস্যার প্রাথমিক সমাধান এবং সঠিক নির্দেশনা পেতে পারবেন।
- সচেতনতা বৃদ্ধি: স্ট্যাম্প ডিউটি, দলিলের প্রকারভেদ ও ই-ডিড সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিল বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা।
হেল্পলাইন কীভাবে কাজ করবে?
প্রাথমিকভাবে, হেল্পলাইনটি একটি ইন্টারেক্টিভ ভয়েস রেসপন্স (IVR) সিস্টেমের মাধ্যমে কাজ করবে। নাগরিকরা ফোন করলে স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম তাদের জিজ্ঞাস্য বিষয়ের প্রাথমিক তথ্য সরবরাহ করবে। প্রয়োজনে তারা সরাসরি ডিরেক্টরেটের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন, যার মাধ্যমে যে কোনও জটিল বিষয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া সম্ভব হবে।
এই হেল্পলাইন নম্বরটি রাজ্যের সরকারি পোর্টাল https://igr.wb.gov.in/ -এ প্রকাশ করা হবে, যাতে সহজেই নাগরিকরা এটি ব্যবহার করতে পারেন। এর মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রি, ই-ডিড জমা দেওয়া, দলিলের সার্টিফায়েড কপি তোলা বা স্ট্যাম্প ডিউটি সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে।
নাগরিকদের জন্য সুবিধা
এই পরিষেবা চালু হলে সাধারণ মানুষ অনেকভাবে উপকৃত হবেন:
- হয়রানি থেকে মুক্তি: জমি বা বাড়ি রেজিস্ট্রেশনে দালালের উপর নির্ভর করতে হবে না।
- সঠিক তথ্য: সরকারি আধিকারিকদের কাছ থেকে সরাসরি তথ্য পাওয়ায় বিভ্রান্তি দূর হবে।
- সময় ও অর্থ সাশ্রয়: ঘরে বসেই ফোনের মাধ্যমে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া সম্ভব।
রাজ্য সরকারের এই নতুন উদ্যোগ জমি ও বাড়ি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াকে আরও সহজ এবং নাগরিক-বান্ধব করবে। সাধারণ মানুষ যেমন উপকৃত হবেন, তেমনি সরকারি পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে।